Business Talk

সুপারফুড তালবিনা!!!

সুপারফুড তালবিনা!!!

আজ আমরা আলোচনা করবো এমন একটি সুন্নাহ খাবার সম্বন্ধে যেটি এন্টিডিপ্রেসেন্ট হিসেবে কাজ করে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। আর সে খাবারটি হচ্ছে “তালবিনা।”

 

তালবিনা এমনই এক সুপার ফুড যা আমাদের রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবাদের (রাঃ) সময়ে শোক-দুঃখসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে খেতে পরামর্শ দেওয়া হতো। এটি আমাদের একটি ভুলে যাওয়া সুন্নাহ তাই অনেকে নাও জেনে থাকতে পারি। অনেকেই হয়তো খাবারটির সাথে পরিচিত নই, ভাবছি “তালবিনা ” আবার কেমন ধরনের খাবার!

 

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “অপ্রিয় কিন্তু উপকারী বস্তুটি তোমরা অবশ্যই গ্রহণ করবে। তা হলো তালবিনা অর্থাৎ হাসা (দুধ ও ময়দা সহযোগে প্রস্তুত তরল পথ্য)।” রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসা এর পাতিল চুলার উপর থাকতো, যতক্ষণ না রোগী সুস্থ হতো অথবা মারা যেতো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৪৪৬)

 

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তাঁর পরিবারের কোন ব্যক্তি মারা গেলে মহিলারা এসে জড় হলো। তারপর তাঁর আত্মীয়রা ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহিলারা ছাড়া বাকী সবাই চলে গেলেন। তিনি ‘তালবিনা’ রান্না করতে বললেন। তা রান্না করা হলো। এরপর ‘সারীদ’ (গোশতের মধ্যে রুটির টুকরো দিয়ে তৈরী খাবার) প্রস্তুত করা হলো এবং তাতে তালবিনা ঢালা হলো। তিনি বললেন, “তোমরা এ থেকে খাও কারণ আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, ‘তালবিনা’ রুগ্ন ব্যক্তির হৃদয়ে প্রশান্তি আনে এবং শোক দুঃখ কিছুটা দূর করে।” (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৪১৭)

 

এবারে আসুন দেখি,তালবিনা কি এবং কি আছে তালবিনাতে?

এটি  হচ্ছে যব বা বার্লি, দুধ, মধু ইত্যাদির সহযোগে তৈরিকৃত এক প্রকার জাউ। যব পিষে, দুধে পাকিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে এটা তৈরি করা হয়। তালবিনা আরবি ‘লাবান’ (টকদই) শব্দ থেকে এসেছে যেহেতু রান্নার পরে এটি -দইয়ের মতো ঘনত্বের হয়, এমনকি দেখতে দইয়ের মতো সাদা। সেজন্য সাদৃশ্য বোঝাতে তালবিনা নামটি এসেছে। যবকে ট্রিপটোফ্যান এবং এর পরিণামে শরীরে সেরোটোনিন বাড়াতে একটি সম্ভাব্য খাবার হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

 

এতে থাকে বি-ভিটামিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ফসফরাস, কপার, পটাশিয়াম, ক্রোমিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট।

 

তালবিনা টাইপ -২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এতে বিদ্যমান দ্রবণীয় খাদ্যআঁশ এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে।

 

অসুস্থ, দুর্বল রোগীদের জন্য শক্তিদায়ক পথ্য, শিশুদের প্রয়োজনীয় আঁশ, আমিষ এবং খনিজ পদার্থ যোগান দেয়।এটি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শিশুদের জন্য খুবই উপকারী।

 

কোলন ক্যান্সার রোধ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে,ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, মানসিক রোগ, বিষন্নতা দূর করে,অ্যালঝেইমার বা বিস্মৃতিপ্রবণতা প্রতিরোধ করে,পাকস্থলির হজমশক্তি বৃদ্ধি করে,শরীরে শক্তি জোগায়,ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে,কলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়,কিডনি রোগীদের জন্য উপকারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *