ছোট বেলায় আমের দিনে নানি দাদির হাতের যবের ছাতু আর বাড়ির গাছের আমের রস দিয়ে মেখে খাওয়ার স্মৃতি এখনো মনে পড়ে। প্রাচীন কাল থেকেই ছাতু একটি জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর খাবার। যা দেহের নানাবিদ উপকার করে আসছে। ইতিহাসবিদ দের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশের ও বিহারের কিছু অঞ্চল থেকে ছাতুর প্রচলন হয়। ছাতু তে প্রচুর পরিমান কার্বো হাইড্রেড থাকায় তা মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারি।
যব হল এক ধরনের শস্য দানা। যা অনেকটা গমের মত। গ্রাম অঞ্চলে একে পায়রা বলে অবিহিত করে। ছাতু কি বা যবের ছাতু কি এসব প্রশ্নের সহজ উত্তর হল। শস্য দানা যব কে গুরো করে যে খাবার তৈরি করা হয় তাই যবের ছাতু নামে পরিচিত। আমাদের রাসূল (সঃ) যবের ছাতু খুব পছন্দ করতেন। যবের ছাতু ঔষধ হিসেবে খেয়ে আসছে অনেক আগে থেকেই।
১০০ গ্রাম ছাতুতে থাকে
প্রোটিন-২০.৬ শতাংশ
ফ্যাট-৭.২ শতাংশ
ফাইবার-১.৩৫ শতাংশ
কার্বোহাইড্রেট,-৬৫.২ শতাংশ
ভুষি-২.৭ শতাংশ
ময়শ্চার-২.৯৫ শতাংশ ও
এনার্জি-৪০৬ ক্যালোরি।
প্রতিদিনের নাস্তায় দুধের সঙ্গে যবের ছাতু মিশিয়ে খেলে ক্ষুধা কম লাগার পাশাপাশি পেট ভরা রাখে। এছাড়া মোটা হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখাতে পারে।
অনেকে যবের ছাতু এবং ওটমিল কে একই খাবার বলে মনে করে থাকেন। আদতে তারা সমগোত্রীয় হলেও ভিন্ন দুইটি খাবার। বাচ্চাদের জন্য বেশ উপযোগী একটি খাবার এই ছাতু। এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাচ্চাদের বিকাশে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যেও গ্রহণ উপযোগী।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ার কারণে ছাতুতে উপস্থিত শর্করা খুব ধীরে ধীরে রক্তে মিশে থাকে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীরও ইচ্ছা হলে ছাতু খেতে পারেন। রক্তচাপ ও কোলেস্টরেল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে
গবেষণায় দেখা গেছে যবের ছাতুর বেটা-গ্লুক্যান আঁশ খাবারে পরিতৃপ্তি থাকতে সাহায্য করে এবং উপকারী ‘গাট’ ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
২৯টি গবেষণা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যবের ছাতু অন্ত্রের কিছু রোগের ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে। যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য এবং প্রদাহজনীত পেটের রোগ।
আচ্ছা এখন আসি কীভাবে খাবেন এই যবের ছাতু? প্রতিদিন সকালে একগ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ ছাতু গুলে খেয়ে নিতে পারেন। আর যদি টেস্টি করে খেতে চান, তাহলে এর সঙ্গে মিলিয়ে নিন এক চা চামচ মধু, সামান্য লেবুর রস ও এক চিমটি টেলে নেওয়া জিড়ার গুঁড়া।পানির সাথে পাতলা করে গুলে খেতে হবে। শক্ত করে মেখে দলা পাকিয়ে খেলে অর্জীন হয়।