Business Talk

পনির কিভাবে খায় ?

পনির কিভাবে খায় ?

প্রতিদিনের খাবার তালিকায় দুধ বা দুধ দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়। কারণ, দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। দুধ দিয়ে তৈরি খাবারেও সমানভাবে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে পনির থেকে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম পেয়ে থাকি। চীজ মূলত গরু, ভেড়া, ছাগল, এবং অন্যান্য প্রাণীর দুধ থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত ধরনের চীজ উৎপাদিত হয়।

এটিকে সাধারনত বার্গার, পিৎজা, মেক্সিকানডিশ, সালাড এবং স্যান্ডউইচ এর মত জনপ্রিয় খাবারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি একটি স্ন্যাকস বা একটি এপিটাইজার হতে পারে। এটি সসেজ, সুপ, পেস্ট্রিস এবং  অন্যান্য খাবারের সাথে যোগ করা যেতে পারে। এতে ক্যালসিয়ামের একটি ভাল উৎস, সুস্থ হাড় এবং দাঁত, রক্তজমাট বদ্ধকরণ, ক্ষত নিরাময় এবং স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখার একটি মূল উৎস। এর পোর্টেবিলিটি, দীর্ঘজীবন এবং চর্বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এবং ফসফরাসের জন্য এটি অত্যন্ত মূল্যবান।

 

এটি হল দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত ছানা থেকে তৈরি একটি দুগ্ধজাত খাদ্য। এটি একটি প্রাচীন খাদ্য। গাভী এবং  অন্যান্য প্রাণী থেকে নেওয়া দুধ থেকে প্রায় ১০০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে এটি তৈরি করা শুরু হয়েছে। ইউরোপ, মধ্য এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে যেখানে চীজ মেকিং উদ্ভত হয়েছিল সেখানে কোন চূড়ান্ত প্রমাণ পাওয়া যায়না। তবে প্রথাটি রোমান যুগের আগে ইউরোপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।

সাধারণত ফুটন্ত দুধে লেবুর রস, ভিনেগার অথবা অম্লজাতীয় কোন পদার্থ যোগ করে ছানা তৈরি করা হয় এবং সেই ছানা থেকে পানি বের করে দিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।

 

পুরো পৃথিবীতে অগণিত পনিরের ধরন রয়েছে । সাধারনত দুধের সাথে আরো অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে এই পনির গুলো তৈ্রী করা হয়ে থাকে।কিছু পনিরের ধরন নিম্নরুপঃ

 

Brie

Cheddar

Feta

Gouda

Mozzarella

swiss ইত্যাদি।

এগুলোই মুলত পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় চীজের ধরন যা মুটামুটি সব দেশেই চলে।

 

এতে ক্যালসিয়াম, ফ্যাট, এবং প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। এটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে vitamin A, এবং B12,zinc, phosphorus, এবং riboflavin।

বিভিন্ন ধরনের পনিরের বিভিন্ন পুষ্টি গুণ রয়েছে। পৃথিবীতে অনেক ধরনের পনির তৈরি করা হয় এবং তাদের সবার পুষ্টিগুণ ভিন্ন ভিন্ন। নিচে কিছু পনিরের পুষ্টিগুণ দেওয়া হল।

Cheddar (28gm)

120 ক্যালরি

1g কার্বোহাইড্রেট, 10g ফ্যাট, and 7g প্রোটিন

200mg ক্যালসিয়াম

190gm সোডিয়াম

 

Gouda (28gm)

110 ক্যালরি

1g কার্বোহাইড্রেট, 9g ফ্যাট, and 7g প্রোটিন

200mg ক্যালসিয়াম

200mg সোডিয়াম

 

Mozzarella (28gm)

85 ক্যালরি

1g কার্বোহাইড্রেট, 6g ফ্যাট, and 6g প্রোটিন

143mg ক্যালসিয়াম

138mg সোডিয়াম

 

Swiss (28gm)

100 ক্যালরি

1g কার্বোহাইড্রেট, 9g ফ্যাট, and 5g প্রোটিন

150mg ক্যালসিয়াম

170mg সোডিয়াম

 

যদিও বিশ্বের অনেক অঞ্চলে এটি পুষ্টির একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং এটি ব্যাপকভাবে খাওয়া হয় তবে এর ব্যবহার সর্বজনীন নয়। কারন Cheese বা পনিরের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।  অতিরিক্ত পনির গ্রহণ করলে আপনার শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পনিরের অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। পনির এসব উপাদান আপনার সহ্য নাও হতে পারে তাই প্রচুর পরিমাণে পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। তবে যাদের দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর এলার্জির সম্ভাবনা রয়েছে তাদের না খাওয়াই ভাল।অতিরিক্ত পনির গ্রহণ করলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। আপনি যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম বা তার বেশি পনির গ্রহণ করেন তাহলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি ১০-২০% বাড়তে পারে। পনিরের প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট থাকে যার কারণে মানুষ অতিরিক্ত মোটা হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি অতিরিক্ত পনির গ্রহণ করেন তাহলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে এবং অনেক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। পনিরের অনেক ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেল, এবং ফ্যাট রয়েছে এবং এর মধ্যে যদি কোন উপাদান আপনার শরীরে সহ্য না হয় তাহলে আপনার কনস্টিপেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পনির গ্রহণের কারণে প্রায় সময়ে কনস্টিপেশনের সমস্যা হতে দেখা যায়। পনিরের প্রচুর পরিমাণে সেচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে আপনার উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং এই উচ্চ রক্তচাপ থেকে স্ট্রোক সৃষ্টি হতে পারে।

 

এখন আসি পনির খাবেন কিভাবে? এটি সাধারণত স্যালাড কিংবা যেকোনো রান্নার ওপর ছড়িয়ে খাওয়া যেতে পারে। মোজারেলা পনির পিৎজার ওপর ব্যবহার করা যেতে পারে। চিজ দিয়ে আপনি পিজ্জা ও পাস্তা তৈরি করে খেতে পারবেন। আপনি আপনার বার্গারের ভিতরে চিজ দিয়ে খেতে পারবেন।কোন কিছু ছাড়া শুধু শুধু পনির খেতে পারবেন।বেশ কিছু ফলের রসের মধ্যে এটি দেওয়া হয়ে থাকে। সল্টি বিস্কিট দিয়ে পনির খেতে পারবেন।মাংস দিয়ে ফাঁপা বল তৈরী করে বলের ভেতর পনির যোগ করতে পারেন। এটি একটি নতুন ধরনের রেসিপি হবে। বিভিন্ন ফলের মাঝখানে পনিরের টুকরো যোগ করে নতুনত্ব স্বাদের খাবার খেতে পারেন। ডিমের অমলেট এর ভেতরে পনির দিয়ে অমলেট তৈরি করতে পারেন। যেকোনো ধরনের প্যাটিস খাওয়ার সময় তার ভেতরে এটি যোগ করে খেতে পারেন। পাউরুটির ভেতরে দিয়ে খেতে পারেন ইত্যাদি।

 

এই ছিল আজকে পনির কিভাবে খায় এ নিয়ে লেখা। বেশি পরিমাণে পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পনির আমাদের জন্য অনেক উপকারী যদি আমরা তা পরিমাণ মতো গ্রহণ করি। তাই, আজ থেকে প্রতিদিন ৪০ গ্রাম পনির যুক্ত করুন আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *