শীতের সকালে ধোঁয়া ওঠা এক কাপ কফি (Coffee) না খেলে মন চনমনে হয়ে ওঠে না। কিংবা শরীরটাও চাঙ্গা হয়ে ওঠে না বহু মানুষেরই অভ্যাস সকাল সকাল এক কাপ কফি (Coffee) খাওয়া। অথবা কাজের মাঝে এনার্জি ফেরাতে কফির কাপে চুমুক দেওয়ার। কিন্তু আদতে স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই মনে করেন কফি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও দুধ দিয়ে কফি খাওয়া উচিত নয়। আবার কেউ বলেন, অত্যধিক খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। অনেক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আবার কেউ বলেন, স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। দুধ দেওয়া খাবেন নাকি ব্ল্যাক কফি, তা নিয়েও রয়েছে নানা মত। তবে, সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, দুধ দেওয়া এক কাপ কফি মানুষের শরীরে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান তৈরি করতে পারে।
যখনই আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস প্রবেশ করে, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়ায় শ্বেত রক্ত কণিকা তৈরি হয়। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ইনফেকশনের হাত থেকে বাঁচায়। দুধ দেওয়া কফিতে রয়েছে এমন কিছু উপকারী উপাদান, যা পেশির নানা সমস্যা, আর্থরাইটিস ও আরও নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস যা উদ্ভিদজাত খাবার থেকে, ফল ও সব্জি থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। সেগুলি খুব সহজেই পাওয়া যায় দুধ দেওয়া থেকে। গবেষণায় দেখা গৈছে যে এবং দুধ একসাথে গ্রহণ করলে প্রদাহ হ্রাস পায়, বিপাক বৃদ্ধি পায় এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত হয়। দুধের সাথে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবে এর পাশাপাশি অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে যে ক্ষতি হতে পারে সেটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাঁদের মতে, অতিরিক্ত কফি খেলে কিডনির স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ব্যহত হতে পারে। কফিতে দুধ যোগ করলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকলাপ কমে যায় এবং রক্তপ্রবাহে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের শোষণ কমে যায়। সকালে খালি পেটে কফি খেলে পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। ফলে পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে এই অ্যাসিডজমে হজমজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদিও শরীরে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে কিন্তু এটি স্নায়ুতন্ত্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কফির বীজে ক্যাফেইন ও অন্যান্য অগ্নীয় উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলীর গায়ে ক্ষত সৃষ্টি করে আলসার ও গ্যাসট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। কফিতে থাকা ক্যাফিন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা দিনে তিন কাপের বেশি পান করেন তাঁদের ঘুম খুব কম হয়। বলা হয় দৈনিক পাঁচ কাপের বেশি কফি খেলে গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। দৈনিক ২০০ মি.গ্রাম ক্যাফেইন শরীরে গেলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি জন্মত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কফিতে থাকা ক্যাফিন ডাইউরেটিক পদার্থ। অর্থাৎ খেলে ঘন ঘন মূত্রবেগ আসে। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। কফিতে উচ্চ মাত্রায় ক্যাফেইন থাকে। মা হওয়ার পর ঘুম কাটাতে খাওয়া একেবারেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই উপকার পেতে নিয়ন্ত্রণে রেখে খেতে হবে কফি। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।