Business Talk

সুগার কন্ট্রোল করতে ডায়েট থেকে বাদ দিন এই ফলগুলি

আমাদের দেশে ডায়বেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন শুধু বেড়েই যাচ্ছে আর এই ডায়বেটিস দাওয়াত করেছে আরো অনেক রোগকে। অতিরিক্ত সুগার, অনিয়ন্ত্রিত ডায়েট, চুপি চুপি একের পর এক অঙ্গকে অকেজো করে দেয়—কিডনি থেকে লিভার,  চোখ। তাই প্রথম থেকেই সুগার কন্ট্রোলে রাখা দরকার। চিকিৎসকদের মতে, খাদ্যাভাসে বড় রকম পরির্বতন হলে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়তে পারে। আবার রাত জাগলে বা দিনের বেলা ঘুমোলেও রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া মানসিক উদ্বেগ, অবসাদ, দুশ্চিন্তা তো আছেই। শহুরে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, খেলাধুলো-ব্যায়াম, এক কথায় কায়িক পরিশ্রম না করলেও রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ে। তার জন্য দরকার প্রোপার ডায়েট কন্ট্রোল।

ডায়াবিটিস রোগীরা প্রায়ই বলেন, তাঁরা খাবারে মিষ্টি গ্রহণ করেন না, তা সত্ত্বেও রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, খাবারের পাশাপাশি আমাদের চারপাশে এমন কিছু ফল রয়েছে যা খেলে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে কিছু ফল ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে, তাই এগুলি এড়িয়ে চলা উচিত। তাই সুগার কন্ট্রোল করতে ডায়েট থেকে বাদ দিন এই ফলগুলি-

আম

ফলের রাজা আমের নাম শুনলেই এর লোভনীয় স্বাদ ও গন্ধে মেতে ওঠেন সকলে। কিন্তু  আমে অনেক বেশি পরিমাণে শর্করা থাকে। মাঝারি আকারের একটি আমে ৪৫ গ্রাম চিনি থাকে। সুগার কন্ট্রোলে রাখতে হলে  আমের দিকে ভুলেও তাকানো যাবে না। তবে মাঝে-মধ্যে এক-দুই টুকরো আম খাওয়া যেতে পারে।

আঙুর

এক কাপ আঙুরে প্রায় ২৩ গ্রাম চিনি থাকে। তবে সীমিত পরিমাণে আঙুর খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়াও স্মুদি, শেক ও ওটমিলে এটি ব্যবহার করা যায়।

চেরি

এক কাপ চেরিতে ১৮ গ্রাম চিনি থাকে। যা আপনার ডায়বেটিক বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা বাঞ্চাল করে দিতে পারে। তাই এটি বাদ দেওয়াই ভালো।

নাশপাতি

মাঝারি আকারের নাশপাতিতে ১৭ গ্রাম চিনি পাওয়া যায়। যা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে দই বা স্যালাডের সঙ্গে কয়েক টুকরো নাশপাতি খাওয়া যায়।

তরমুজ

গরমে এই ফলটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। আবার এতে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণ পনির জন্য গরমকালে এটি খাওয়া স্বাস্থ্যোপযোগী। এই রমজানে ইফতারিতে  তরমুজ শরীরে পানির ঘাটতি পূরন করে ও ইলেক্ট্রোলাইটের অভাব দূর করে। এক বড় ফালির তরমুজে প্রায় ১৭ গ্রাম চিনি থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণে এটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।

কলা

এনার্জির পাওয়ার হাউস বলা যায় কলাকে। মাঝারি আকারের কলায় ১৪ গ্রাম চিনি থাকে। সুগার কন্ট্রোলে এই ফলটিও বেশি খাওয়া যাবে না।প্রাতঃরাশে পিনাট বাটার স্যান্ডউচের সঙ্গে কয়েক টুকরো কলা মিশিয়ে খেতে পারেন।

তাছাড়া খেজুর,আনারস,ডলিম,সবেদা এসব ফলও বাদ দিতে হবে। এই ফলগুলি স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই উপকারী। কিন্তু ডায়াবিটিস রোগীদের এইসব ফল খাওয়া উচিত না। অথবা খেলেও তা পরিমিতভাবে খেতে হবে।

সুগার রোগীরা তাঁদের ডায়েটে শুকনো ফল অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। ২০১৭ সালে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে বাদাম বা শুকনো ফল ভালো বিকল্প হতে পারে। একই সঙ্গে আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে ড্রাই ফ্রুটসের কথা।আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ডায়াবেটিস রোগীরা শুকনো ফলের পাশাপাশি তাদের ডায়েটে কিছু ফল যুক্ত করতে পারেন যা তাঁদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে না। এর মধ্যে রয়েছে এপ্রিকট, কালো মটর, জাম, কমলা, পেঁপে, পিচ, স্ট্রবেরি এবং ট্যানগারাইন।

ডায়াবিটিসে কেবল মিষ্টি ফল নয়, কার্বোহাইড্রেটও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন ব্যক্তি যে পরিমাণ কার্ব গ্রহণ করেন তা তাদের চিনির স্তরকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে।

একটি মাঝারি আপেলের মধ্যে ১৫-২০০ গ্রাম কার্ব থাকে তবে একটি বড় কলাতে ৩০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। একটি চকোলেট মাফিনে ৫৫ গ্রাম থাকে এবং একটি শুকনো ফলের অন্তত ২০ গ্রাম কার্ব থাকে।

সুগার কন্ট্রোলে উপরের ফলগুলি না খেয়ে নিচের এই ফলগুলি খেতে পারেন কারণ এই ফলগুলোতে

চিনির পরিমাণ কম। ফলগুলো হলো—

অ্যাভাকাডো

একটি অ্যাভাকাডোয় মাত্র ১.৩৩ গ্রাম চিনি থাকে। স্যালাড, টোস্টে দিয়ে বা স্মুদি, শেক বানিয়ে এটি গ্রহণ করতে পারেন। এতে চিনির পরিমাণ অত্যন্ত কম হওয়া সত্ত্বেও অধিক পরিমাণে ক্যালোরি থাকে।তাই ক্যলোরির দিক বিবেচনা করে পরিমাণটা কমিয়ে দিতে হবে।

পেঁপে

পেঁপের একটি ফালিতে প্রায় ৬ গ্রাম চিনি উপস্থিত। এতে নুন ও লেবু মিশিয়ে খেলে স্বাদ বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও দইয়ে মিশিয়ে খাওয়া যায় এটি।

পেয়ারা

মাঝারি আকারের পেয়ারায় ৫ গ্রাম চিনি ও ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে। অধিক ফাইবারের জোগানের জন্য খোসা-সহ পেয়ারা খাওয়া উচিত। পেয়ারা স্মুদি বা শেক বানিয়ে পান করতে পারেন। আবার স্যালাডেও কয়েক টুকরো পেয়ারা মিশিয়ে খাওয়া যায়।

খরবুজ

এতে ৫ গ্রাম চিনি ও ২৩ ক্যালোরি থাকে। এই ফলটি এমনিই খাওয়া যায়, আবার স্যালাড বা স্মুদি বানিয়েও খাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *