জেনে নিন সকালে ডিম খাবেন কেন?
প্রাণিজ আমিষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে অংশটি খাবার হিসেবে ব্যবহার হয় তার মধ্যে ডিম হচ্ছে অন্যতম। বড় সেদ্ধ ডিমে আছে ৭o ক্যালরি মান পুষ্টি। ৬ গ্রাম উচ্চ মানের প্রোটিন আছে। ডিমের সাদা অংশটুকু উচ্চ মানের জৈব আমিষ, আর কুসুমে স্নেহ পদার্থ, লৌহ ও ভিটামিন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকে। সব বয়সের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ডিম অত্যন্ত কার্যকর। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় গড়নে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর। কেননা ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। আবার কুসুমে আছে ভিটামিন ডি, যা হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এখন জেনে নিন সকালে ডিম খাবেন কেনো।
প্রোটিনের উৎস সকালের খাবারে প্রোটিন যোগ করে দিনটি শুরু করুন। ডিমের কুসুম এবং সাদা অংশ, দুটোই উচ্চ মানের প্রোটিন দিয়ে বোঝাই। একটি বড় ডিমের মধ্যে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে যা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ১১%-১৪% পূরণ করে। তাই এটি আপনার দিন শুরু করার সবচেয়ে সঠিক খাবার।
সম্প্রতি একটি বিখ্যাত জার্নালে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে যা জানা গেছে তা খুবই চমকপ্রদ। কয়েক হাজার মানুষের ওপর করা এই গবেষণাটিতে দেখা গেছে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে একটা বা দুটি ডিম খেলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ছোট-বড় সব রোগই দূরে পালাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মেলে আরো অনেক উপকারিতা।
অনেকেরই মর্নিং সিকনেস বা সকালে অসুস্থতা থাকে। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এই মর্নিং সিকনেস দূর করতে সাহায্য করে ডিম। প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস, তাই এটি সকালের শক্তি বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত খাবার। প্রোটিন কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে দেহে ভাঙতে বেশি সময় নেয়। সুতরাং, আপনার শক্তি দীর্ঘায়িত হয়।
ক্ষুধা কমায়।গবেষণায় দেখা গেছে যে, সকালে ডিম খেলে সারাদিন কম ক্ষুধা লাগে। ডিম দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখে এবং শরীরে সঠিক পুষ্টি পৌঁছে দেয়। যে কারণে সকালের নাস্তায় ডিম খেলে ক্ষুধা কম লাগবে এবং ক্লান্তিও কম আসবে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে সারাদিন ধরে এটাসেটা খেতে থাকলে ওজন তো বাড়বেই! কিন্তু ডিম খাওয়ার কারণে ক্ষুধা কম লাগে এবং সারাদিনে কম খাওয়া হয়। যে কারণে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। একটি বড় ডিমের মধ্যে কেবল ০.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে এবং কোনো চিনি থাকে না, যা ওজন বাড়ানোর মূল কারণ। স্বাস্থ্যকর বিকল্প দিয়ে আপনার দিন শুরু করা আপনার পুরো দিনকে প্রভাবিত করবে এবং আপনি কম কার্বস গ্রহণ করবেন।
অনেকেরই মনে করেন বেশি ডিম খেলে নাকি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই ধরণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। কারণ একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ডিমে উপস্থিত ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল আসলে ভাল কোলেস্টেরলের পর্যাযে পরে। ফলে এটি শরীরের কোনো ক্ষতি তো করেই না, বরং উপকারে লাগে। তাই তো প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে ১টা করে ডিম খেলে শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে থাকে, ফলে কমতে থাকে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ।
এক গ্লাস হালকা গরম পানি যেমন আপনার বিপাক প্রক্রিয়া বাড়িয়ে তোলে, ডিমও তেমনভাবে কাজ করতে পারে। ডিমে রয়েছে সমস্ত প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা বিপাকের উন্নতি করে। ডিম প্রোটিনে ভরা, তাই এটি বিপাক প্রক্রিয়া আরও বেশি উন্নত করে।