Business Talk

জেনে নিন লিচু ফলের গুণাগুণ

ছোট থকে বৃদ্ধ সবাই পছন্দ করেন লিচু ফল। গ্রীষ্মকালীন এই রসালো ও সুস্বাদু ফলটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এর উপকারও অনেক।   জেনে নেয়া যাক লিচু খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিউপাদান।

·         প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে আছে

·         ক্যালোরি—৬৬ জুল,

·         ফ্যাট—০.৪ গ্রাম

·         সোডিয়াম—১ মিলিগ্রাম  

·         পটাসিয়াম—১৭১মিলিগ্রাম

·         টোটাল কার্বোহাইড্রেট —১৭ গ্রাম

·         প্রোটিন —০.৮ গ্রাম

এছাড়া ভিটামিন ও মিনারেলের ভেতর ভিটামিন সি ৭২%, আয়রন ১%, ভিটামিন বি-৬ ৫% ও ম্যাগনেসিয়াম আছে ২%।

লিচুতে উপস্থিত থাকা ডায়েটেরি ফাইবার আমাদের ডাইজেস্টিভ হেলথের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।লিচুতে থাকা ভিটামিন-সি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে (যেমন—ঠাণ্ডা, কাশি, ফ্লু ইত্যাদি)। এর আছে ক্যান্সার প্রতিরোধ সহায়ক কিছু বৈশিষ্ট্যও। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে এটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে,  এতে ক্যালোরি থাকে খুব কম। যে কারণে ওজন বাড়ার ভয় থাকে না। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। এতে থাকা অলিগোনল,  নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সহজ হয়।  লিচুতে থাকা  ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং কপার হারের জন্য উপকারী। এসব উপাদান হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে থাকে। কিডনির জন্য উপকারী লিচুতে পর্যাপ্ত পানি এবং পটাসিয়াম থাকার কারণে তা কিডনিতে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। এই ফল ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্বও কমায়। যে কারণে কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি কমে।  শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করতে কাজ করে লিচু। সেইসঙ্গে এটি টিস্যুর ক্ষতি প্রতিরোধ করে।

কিন্তু পছন্দের এই ফলটি অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দিনের যেকোনো সময় খালি পেটে খেয়ে থাকেন। যা একদমই উচিত নয়।

মৌসুমি এই ফলে ‘হাইপোগ্লাইসিন’ নামক একটি উপাদান রয়েছে যেটা মৃত্যুর কারণ হতে পারে! তাই খালি পেটে লিচু খাওয়ার ফলেই মৃত্যু হতে পারে। ‘হাইপোগ্লাইসিন’ নামক এই উপাদানটি শরীরে শর্করার পরিমাণ খুবই কমিয়ে দেয়। ফলে সমস্যা হয়। আর শরীরে প্রয়োজনের থেকে বেশি মাত্রায় শর্করা কমে গেলে তখন  তা  মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পাকা লিচুতে ‘হাইপোগ্লাইসিন’ উপাদানের পরিমাণ কম থাকলেও কাঁচা লিচুতে এর পরিমাণ মারাত্মকভাবে থাকে। এ জন্য কাঁচা লিচু খাওয়া মোটেও উচিত নয়। আবার গবেষণা বলছে, লিচু বেশি খাওয়ার ফলে জ্বরও হতে পারে।

ব্যক্তিবিশেষে লিচু অ্যালার্জির সূচনা করতে পারে। শুধু তাই নয়, আমাদের শরীরের হরমোনাল ভারসাম্য নষ্টের ক্ষমতাও এর আছে।  গর্ভবতী মহিলাদের ব্রেস্টফিডিং স্টেজে যাওয়ার আগে লিচু না খাওয়াই ভালো। অত্যধিক লিচু খাওয়ায় রক্তপাত এবং ইনফেকশন সৃষ্টি করে অনাগত শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

পরিশেষে বলতে চাই খালি পেটে লিচু খাওয়া ক্ষতিকর হলেও ভর পেটে লিচু খাওয়া সমস্যার নয়। আর কাঁচা খাওয়া ঠিক নয়। এ জন্য ভর পেটে পাকা লিচু খাওয়া যেতে পারে। তাতে কোনো সমস্যা হয় না। তবে প্রতিদিন বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।নিজে খান, আশেপাশের মানুষকেও উপহার দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *