ছোলার উপকারীতা ও অপকারীতা
শরীরের সমস্ত ক্লান্তি দূর করে শক্তির গতি বাড়িয়ে তোলার চাবিকাঠি হচ্ছে ছোলা। কাঁচা ছোলায় আছে হাই প্রোটিন এনার্জি। ছোলা এমন একটি খাবার যা কাঁচা অবস্থায় ভাজা, সেদ্ধ, শুধু ভেজানো, বা তরকারি হিসেবেও খাওয়া যায়। যদিও এটি কাঁচা হিসেবে খেলে উপকার পাওয়া যায়, তবে সেটা সবসময় সবার শরীরে স্যুট করে না৷ ভালো করে ধুয়ে সেদ্ধ করে খেলে পেটেও সমস্যা হয় না আবার স্বাস্থ্যও ঠিক থাকে৷
ভাজা ছোলায় উপস্থিত প্রোটিন ও ফাইবার রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের জুভেনাইল ডায়বিটিজের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে ভাজা ছোলা। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রতিদিন ১ কাপ, অর্থাৎ প্রায় ১৬৪ গ্রাম ভাজা ছোলা খান। এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উল্লেখযোগ্য উৎস।ছোলায় বিদ্যমান ভিটামিন বি, জিঙ্ক, এবং ম্যাগনেসিয়াম টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
দৈনিক সেদ্ধ ছোলা গ্রহণে বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়৷ ছোলার ফ্যাটি অ্যাসিড কোলনের প্রদাহ কমায় এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে৷ আবার এর ফলিক অ্যাসিড রেক্টাল ক্যান্সারের আশঙ্কাও কমিয়ে দেয়। ছোলাতে সেপোনিন নামক উদ্ভিজ্জ যৌগ পাওয়া যায় যা দেহে ক্যান্সারের বিকাশ ঘটতে দেয় না এবং টিউমারের বৃদ্ধি আটকে দেয়। পাশাপাশি ছোলার ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ ফুসফুসের ক্যান্সার এবং মেয়েদের স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
ভাজা ছোলা ক্যালশিয়াম, ফসফেট, ম্যাগনিজ, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিনের মতো পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এই সমস্ত পুষ্টিকর উপাদান বাচ্চাদের হাড় ও মাংসপেশী মজবুত করতে সাহায্য করে।
ছোলাতে বিদ্যমান প্রোটিন এবং ফাইবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। এগুলো অনেকক্ষণ পেটে থাকে তাই প্রতিদিন সকালে সেদ্ধ খেলে সারাদিনে আর ক্ষুধা লাগে না। ফলে ভাজাভুজি খাওয়ার তাগিদ কমে যায়। ছোলার প্রোটিন ক্ষুধা হ্রাসকারী হরমোনগুলোর কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
ভাজা ছোলা অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উল্লেখযোগ্য উৎস। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ কাপ ভাজা ছোলা খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে দেওয়া যায়। আবার গুড়ের সঙ্গে ভাজা ছোলা খেলে, এতে উপস্থিত পটাশিয়াম হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমিয়ে আনে।
ছোলায় আয়রনের আধিক্য আছে। ফলে এটা দেহে রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। আবার ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় এটা অল্পবয়সী মহিলাদের শরীরে হাইপারটেনশনের প্রবণতা কমায়। সেই সাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন আধা কাপ সিদ্ধ ছোলা খেলে পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ছোলায় আইসোফ্লাভন নামক একটি উপাদান বিদ্যমান থাকে যা ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর আর্টারির কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
এ ছাড়াও কাঁচা ছোলা বাচ্চাদের সুষ্ঠু বিকাশে সাহায্য করে। তাদের মস্তিষ্ককে বিকশিত করে। শরীরে পুষ্টিকর উপাদানের শোষণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। অ্যানিমিয়া দূর করে। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও মজবুত করে ভাজা ছোলা।
কাচা ছোলা অনেক উপকারী হলেও এর অপকারিতা ও রয়েছে। কাঁচা ছোলা খেলে অনেক উপকার রয়েছে। তবে অনেকের বমির সমস্যা রয়েছে। যাদের বমির সমস্যা রয়েছে তাদের কাঁচা ছোলা না খাওয়াই ভাল। কেননা খেলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর বমি হলে শরীর দূর্বল হয়ে যেতে পারে।
মসলা দিয়ে ছোলা ভাজা খেতে সুস্বাদু হলেও অনেকের জন্য তা ক্ষতির করন হতে পারে। যাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা অতিরিক্ত চর্বি জনিত সমস্যা রয়েছে তারা ভাজা ছোলা খা্ওযা এড়িয়ে চলবেন। কারণ মাএাতিরিক্ত তেল, মসলা তাদের জন্য মটেও ভাল নয়।
যাদের কিডনির সমস্যা আছে, যাদের ব্লাড ডায়ালাইসিস চলছে, যাদের শরীরে কেটিনিন ও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি তাদের যেকোনো ধরনের ছোলা খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে, আর তা না হলে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সঠিক নিয়মে যেভাবে খাবেন কাঁচা ছোলা খালি পেটে খেতে হবে সাধারণত একজন পুর্নবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য ২০ থেকে ৩০ গ্রাম পরিমান খেলেয় যথেষ্ট আর ছোলা খেয়ে যারা ওজন বাড়াতে চান তারা ২০/৩০ গ্রাম এর এক্টু বেশি খেতে পারেন
তো প্রথমেই ছোলা গুলো পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ১ কাপ পানির মধ্যে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ভেজানো ছোলা গুলো ভালো করে চিবিয়ে খেয়ে নিবেন
এই ভাবে ছোলা কাচা অবস্থায় খালি পেটে খেতে পারলে আপনারা ছোলার পরিপূর্ণ পুষ্টিগুন পেয়ে যাবেন।