আমাদের দেশে টক-মিষ্টি স্বাদের অতি পরিচিত ফল জাম্বুরা। জাম্বুরার বৈজ্ঞানিক নাম সাইট্রাস প্যারাডিস্ট। এটি সাইট্রাস গোত্রের।জাম্বুরা, বাতাবি লেবু, বাদামি লেবু, ছোলম, বড় লেবু যে নামেই ডাকা হোক না কেন, ফলটি ছোট-বড় সকলের কাছে সমানভাবে যেমন প্রিয় তেমন নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর। চলুন জেনে নেওয়া যাক জাম্বুরার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।
এতে সবচেয়ে বেশি আছে ভিটামিন সি। জাম্বুরায় ভিটামিন সি রয়েছে ১০৫ মি.গ্রা। কাগজি লেবু, পাতি লেবুতে আছে ৬৩ মি.গ্রাম। কমলাতেও আছে ৩৪ মি.গ্রা, কামরাঙ্গাতে ৬১ মি.গ্রা, আমড়াতে ৯২ মি.গ্রা।আনারস, আমলকী ও এই ধরনের ফলে যে পরিমাণ ভিটামিন সি আছে, তার চেয়ে বেশি রয়েছে জাম্বুরায়। জাম্বুরা ভিটামিন ‘সি’, ‘এ’,পটাসিয়াম, ফলিক এসিড,আয়রন, ক্যালসিয়াম, কপার, ফসফরাস ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস,পাইরিডক্সিন ও থায়ামিনও রয়েছে। লাল রঙের জাম্বুরা নানা রকম ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসে সমৃদ্ধ। এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফ্ল্যাভোনয়েড, নারিঞ্জেনিন ও নারিঞ্জিন। রয়েছে লাইকোপেন, বিটা ক্যারোটিন, জ্যান্থিন ও লিউটিন । আরো আছে খাদ্য আঁশ পেকটিন, যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে শরীরের দূষিত পর্দাথগুলো শরীর থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে। ভিটামিন ‘এ’ ও ফ্ল্যাভোনয়েড দৃষ্টিশক্তির জন্য আবশ্যক। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’ নিশ্চিত করে ত্বকের স্বাস্থ্য ও মিউকাস মেমব্রেনের সুস্থতা। ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, সঙ্গে সঙ্গে রক্ষা করে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালস থেকে। এছাড়া আয়রন শোষণেও এটি সহায়তা করে। এশিয়ান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন লাইকোপেন সমৃদ্ধ ফল যেমন-জাম্বুরা ও গ্রিন টি পান করে তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অন্যদের তুলনায় ৮২ থেকে ৮৬ শতাংশ কমে যায়।
আমাদের দেশে প্রচুর জাম্বুরা পাওয়া যায়। দামও কম। আসুন বিদেশী কমলা ও মাল্টা না খেয়ে যত দিন জাম্বুরা পাওয়া যায় তত দিন জাম্বুরা খেয়ে ভিটামিন ‘সি’র অভাব পূরণ করি।