Business Talk

কিছু প্রোটিন সমৃদ্ধফল

আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।  প্রোটিন সমৃদ্ধফল খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর বড় অণুগুলিকে অ্যামাইনো অ্যাসিড নামের ছোট ইউনিটে ভেঙে ফেলে। অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরের মাংসপেশী ,টিস্যু এবং ত্বক গঠনে সাহায্য করে। প্রোটিন সমৃদ্ধফল খাবার ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে।মাংস, মাছ, ডাল এবং ডিম প্রোটিনের ভালো উৎস। এছাড়াও প্রোটিনসমৃদ্ধ এমন কিছু ফল রয়েছে যেগুলি ওজন কমাতে কার্যকরী। অনেক ধরনের রফল আমরা খাই। অথচ আমরা অনেকেই জানি না কোন কোন ফলে বেশি প্রোটিন রয়েছে। তাই ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন হলে নিজের খাবারে যোগ করা যায় বাড়তি পুষ্টি। একনজরে তাই দেখে নেওয়া যেতে পারে প্রোটিন সমৃদ্ধফল কোনগুলো।

পেয়ারা

আমাদের দেশে পেয়ারা একবারেই সুলভ। দেশি পেয়ারার পাশাপাশি নানা জাতের পেয়ারা এখন বাজারে রয়েছে। এই ফল দারুণ প্রোটিনসমৃদ্ধ।  প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারাতে ২৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন থাকে অর্থাৎ প্রতি কাপ পেয়ারায় অন্তত ৪.২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়া এতে আরও রয়েছে ভিটামিন সি,লাইকোপিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের জন্য উপকারী। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। এছাড়া পেয়ারাতে আছে পটাশিয়াম যা রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। পেয়ারা ফাইবারসমৃদ্ধ ফল হওয়ায় এটি খেলে অনেকক্ষন পেট ভরা থাকে। এতে ক্ষুধা কম অনুভূত হয়।  সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই ফলটির কিছুই ফেলা যায় না। খাওয়া যায় সবই।

খেজুর

ক্যালরি কম এবং উচ্চ ফাইবারে ভরপুর খেজুর ওজন হ্রাসের জন্য চমৎকার একটি ফল। তাজা বা শুকনো যেকোন খেজুরই উপকারী। বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খেজুর দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ক্ষুধাও কমায়। প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে প্রোটিন থাকে ১৪০ গ্রাম। 

অ্যাভাগাডো

অ্যাভাগাডো আমাদের দেশের ফল নয়। তবে বিদেশ থেকে আসে। বিভিন্ন সুপারশপে পাওয়া যায়। দাম একটু বেশি। তবে ফলটি খেতে যেমন মজা তেমনি পুষ্টিকরও। এক কাপ চৌকো করে কাটা অ্যাভাকাডোয় মিলবে ৩ গ্রাম প্রোটিন। আর যদি ভর্তা করে ফেলেন তাহলে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে হবে ৪.৬ গ্রাম। এতে অবশ্য আরও আছে ফ্যাট, আঁশ, পটাশিয়াম।  স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে ভরপুর অ্যাভোকাডো রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান হৃদরোগের জন্য উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় অ্যাভোকাডো ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে। খাওয়া যায় নানাভাবে।

কাঁঠাল

কাঁঠাল আমাদের দেশের জাতীয় ফল। এখন কাঁঠালের মৌসুম যদিও নয়, তবে জেনে রাখা যেতে পারে এর প্রোটিনের পরিমাণ। এক কাপে পাওয়া যায় ২.৮ গ্রাম প্রোটিন। তাছাড়া কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ছিক্স রয়েছে। যা প্রোটিন জাতীয় খাবার বিপাকের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এই ফলে  অন্যান্য উপাদানের মধ্যে রয়েছে  প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এ এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।  কাঁঠালে থাকা ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এ কারণে এটি খেলে দীর্ঘক্ষন পেট ভরা থাকে। ফলে ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমে যায়। কাঁঠাল কাঁচা অবস্থায় রান্না করে খাওয়া যায়; আর পাকলে তো কথাই নেই।

কলা

পেশিকে চনমনে রাখতে কলার কোন বিকল্প নেই। একটা মাঝারি সাইজের কলায় প্রোটিন থাকে ১.৩ গ্রাম। কলায় আয়রন আর পটাশিয়াম থাকে প্রচুর পরিমাণে। যেকোনো সময়েই খাওয়া যায়। খাওয়া যায় পাকা কিংবা কাঁচা দুইভাবেই।

কিশমিশ

কিশমিশ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। বাংলার ফল না হলেও যে বাঙালির কিশমিশ অনুরাগ নেই, তা কোনভাবেই বলা যাবে না। ১ আউন্স বা ৬০টি কিশমিশের প্রোটিনের পরিমাণ ১ গ্রাম। কিশমিশ খাওয়া যায় নানাভাবে। তবে বাঙালির মোগলাই পদ আর মিষ্টান্নে কিশমিশ থাকে স্বমহিমায়।

কমলা

ভিটামিন সির দারুণ উৎস হল কমলা। মাঝারি সাইজের একটা কমলায় ১.২ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তবে রস করলে প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায়। এ জন্য রস না করে খাওয়াই ভালো। তাতে প্রোটিনের পরিমাণ যেমন বেশি পাওয়া যায়, তেমনি মেলে আঁশের উপকারিতাও।

কিউই

কিউই আমাদের দেশের ফল নয় বলেই দাম বেশি। তবে অমিল নয়। পাওয়া যাবে সুপারশপগুলোতে। এক কাপ কিউইতে আছে ২ গ্রাম প্রোটিন। এর খোসা থেকে সবই খাওয়া যায়। তবে ইচ্ছে করলে খোসা ছাড়িয়েও নেওয়া যেতে পারে।

অ্যাপ্রিকট

অ্যাপ্রিকটও বিদেশী ফল তবে এটা আমাদের দেশে পাওয়া যায়। এক কাপে পাবেন ২.৩ গ্রাম প্রোটিন। শুকনো আপ্রিকট দিয়েও নানা মুখরোচক খাবার তৈরি করা যায়। এমনিও খাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *