কলা খুব সাস্থ্যকর ও জনপ্রিয় একটি ফল। এটি সাধারণত সারা বছরই হয়ে থাকে। তাই, সব মৌসুমেই ফল-ফ্রুটসের দোকানে সব ফলের মাঝে কলাকে দেখতে পাওয়া যার সর্বাগ্রে। পাকা কিংবা কাঁচা, দুই ধরণের কলাই উপকারি। এই আর্টিকেল পড়ে কলার উপকারিতা ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো।
কলার বৈজ্ঞানিক নাম হলো ‘MUSA’. এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির কলার বিভিন্ন আলাদা আলাদা নাম রয়েছে আমাদের দেশে-
সাগর
চাম্পা
সবড়ি
কাঠালী ও
বাংলা কলা বেশ জনপ্রিয়।
ডায়েটারি ফাইবার ও শর্করাসমৃদ্ধ এই ফল ভিটামিন বি ৬ এর একটি দুর্দান্ত উৎস। এই ফলে আরও থাকে ভিটামিন বি, সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজ। ছোট-বড় সবাই এই ফল খেতে পছন্দ করেন।
কলায় থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহ কিডনির কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ উপকারী।
এছাড়াও দৈনিক কলা খেলে কিডনিতে পাথর হওয়া, মুত্রনালীর ইনফেকশন হওয়া, মস্তিষ্কের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা, আলসারের ঝুঁকি ইত্যাদিও কমে যায়।
এছাড়াও, একটা জরিপে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন কলা খেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫০ ভাগ কমে যায়।
কলায় প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, ২৫ গ্রাম মতো ফাইবার খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ থাকে কলা। তাই প্রতিদিন কলা খেলে হার্ট যেমন ভালো থাকে, তেমনই ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
কলায় থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি শরীরের প্রতিদিনের ভিটামিন সি’র চাহিদাও পূরণ হবে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, অতিরিক্ত ওজন বা ডায়াবেটিসের সমস্যা না থাকলে প্রতিদিন কলা খাওয়া ভালো। কারণ কলার দাম বেশি নয়। কম খরচে এক ফলেই এতো ধরনের পুষ্টি হয়তো অন্য খাবারে মেলে না।
এতে ফাইবার থাকায় পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আবার পেট খারাপ হলে কাঁচকলা খেলে উপকার পাবেন।
কলার যেমন রয়েছে অনেক উপকারিতা, তেমনি রয়েছে বেশ কিছু অপকারিতা। কলার অপকারিতাগুলোর মধ্যে কিছু হলো –
এটি একটি অধিক মাত্রায় পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য। তাই অতিরিক্ত খেলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দিনে একটি অথবা সর্বোচ্চ ২টির বেশি খাওয়া উচিত না। এছাড়াও যাদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে, তাদের বেশি মাত্রায় খেলে সেই সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদের খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কলাতে প্রচুর পরিমাণ অ্যামিনো এসিড থাকে। তাই অতিরিক্ত খেলে রক্তনালিতে সমস্যা হতে পারে।
রাতে খাওয়ার ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা উত্তম। একটু হজম হতে দেরী হয় বলে, রাতে খেলে তা হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
খালি পেটে কলা খাওয়া যাবে না। খালি পেটে কলা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
কলায় প্রচুর পরিমাণে সুগার থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পাকা কলা না খাওয়াটাই উত্তম।
ভারি খাবারের সঙ্গে কলা খাবেন না। খাবার খাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে কলা খাবেন। কারণ কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। সময়ের ব্যবধানে খেলে ফাইবার সহজেই শরীর গ্রহণ করতে পারবে।
এটি যে কতটা পুষ্টিকর এবং উপাদেয় খাদ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক বিষয় মাথায় রেখে দৈনিক খাওয়া যায় নিমিষেই। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দৈনিক একটি করে খাওয়াকে অভ্যাস হিসেবে তৈরি করা যেতেই পাড়ে।
কলার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজ এই পর্যন্তই। ধন্যবাদ।