Business Talk

আদা সব রোগ নিরাময়ের দাদা!!!

আদা

আদা সব রোগ নিরাময়ের দাদা!!!

আদা–মধু–পানি, সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। আমাদের শরীরে প্রায় সব ধরনের রোগ নিরাময়ের জন্য আদা যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কথায় বলে ‘আদা সকল রোগ নিরাময়ে দাদা’।  আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট বিদ্যমান। যার কারণে সব বয়সী মানুষ  খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা–মধু–জল সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর।

 

আদা একটি উদ্ভিদ মূল যা মানুষের মসলা এবং ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। আদা খাদ্যশিল্পে, পানীয় তৈরীতে, আচার, ঔষধ ও সুগন্ধি তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। সেই প্রথম মশালাগুলির মধ্যে একটি যা এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি করা হয়েছিল। যা মূলত মশলার বাণিজ্যের মাধ্যমে পৌঁছেছিল। প্রাচীন গ্রীস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত।আদা খেলে ঠান্ডা সেরে যায়।

 

জেনে নেওয়া যেতে পারে আমাদের কোন কোন সমস্যা নিবিড়ভাবে কাজ করে।

আদার রস শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল। এটি  আর্থারাইটিসের উপসর্গ কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে যাঁদের হাঁটুতে আর্থারাইটিস দেখা দেয়।

আদায় জিনজেরোল থাকায় তা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই জিনজেরোল হলো অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের শক্তিশালী উপাদান। প্রাণী ও মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটার মধ্যে রয়েছে শরীরের ওজন ও কোমর-পেটের ওজন ঠিক রাখার অনুপাত।  আদা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের একাধিক হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাস মর্নিং সিকনেস দেখা দিতে পারে। বারবার এরকম বমি বা বমি বমি ভাব হলে তা আপনাকে আরও ক্লান্ত করে দিতে পারে। সেইসঙ্গে অস্বস্তি তো থাকেই। সামান্য আদা চিবিয়ে খেলে এ ধরনের সমস্যা অনেকটাই দূর হয়। তবে আদা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। কারণ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত আদা খেলে তা মিসক্যারেজের কারণ হতে পারে।

অনেকের গাড়িতে উঠলে বা সমুদ্রে গেলে বমি বমি ভাব হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা দূর করতেও কাজ করে আদা। কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন রোগীদের ক্ষেত্রেও বমি বা বমি বমি ভাব দূর করতে কাজ করে এই উপকারী মসলা।

আদা খেলে কিছু ইনফেকশনের ভয় দূর হয়। জিনজিভাইটিস এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ তার মধ্যে অন্যতম। সাধারণ কিছু ইনফেকশন এবং ভাইরাসের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার খুবই পরিচিত যেমন ঠান্ডা-কাশি। প্রতিদিন অন্তত দুই-তিন কাপ গরম আদা-পানি খেলে তা ফ্লু দূর করতে দ্রুত কাজ করবে। বেশি উপকারিতা পেতে চাইলে এর সঙ্গে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।

 

এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কিছু অপকারিতাও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন অতিরিক্ত খেলে কিছু ক্ষতিও হতে পারে। অতিরিক্ত আদা খেলে বুকে ব্যথাও হতে পারে।

যখন কোনো বিশেষ ধরনের ওষুধ খাচ্ছেন চিকিৎসকের পরামর্শে তখন বুঝে খান। যারা ডায়াবেটিস ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খান, তাদের জন্য এটি বেশ ক্ষতিকর। কারণ, এই দুই অসুখের জন্য যে ওষুধ ব্যবহৃত হয়, তার সঙ্গে আদার রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই নিয়মিত কোনো ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে অতিরিক্ত খাবেন কি না, সেই বিষয়ে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সম্প্রতি ‘লাইভস্ট্রং’ নামের চিকিৎসাবিজ্ঞানের জার্নালে এর গুণাগুণ নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পেটের গণ্ডগোল, বুকজ্বালা, বমিবমি ভাব— এ সবই হতে পারে আদার কারণে। শুধু তাই নয়, রক্তে শর্করার মাত্রা ব্যাপক ভাবে কমে যেতে পারে অতিরিক্ত আদার ফলে। কমে যেতে পারে ঘুমও।

 

অতিরিক্ত পরিমাণে আদা খাওয়ার আগে ভাবুন। দৈনিক ৫ গ্রাম পর্যন্ত খেলে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু তার বেশি খেলেই হতে পারে সব মারাত্মক বিপদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *